খুনি ও শঙ্খিনী (Khuni O Shonkhini)

খুনির প্রতি এক অদম্য আকর্ষণ ও বাস্তবতার কশাঘাতে রক্তাক্ত হৃদয়ের অনিবার্য দ্বন্দ্ব ও নির্মম পরিণতি ‘খুনি ও শঙ্খিনী’ উপন্যাসের মূল উপজীব্য। উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র মুনিয়ার মনোজাগতিক উত্থান-পতন বাস্তবতার সীমা অতিক্রম করে এক অতিবাস্তব জগতের দুয়ারে কড়া নাড়ে। নিজস্ব অন্তর্গত টানাপোড়েনে মুনিয়ার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা সুদূরপরাহত। আশৈশব ভয়ংকরের পূজারি মুনিয়া বিশ^বিদ্যালয় জীবনে এসে জড়িয়ে পড়ে দুই বিপরীত মেরুর পুরুষের সঙ্গে। যাদের একজন জ্ঞান ও শিল্পের প্রতি নিবেদিত, অন্যজন খুনের মন্ত্রে বিভোর। আলভির ব্যক্তিত্ব ও জ্ঞানস্পৃহা মুনিয়াকে সাময়িক আকৃষ্ট করলেও মুনিয়া মূলত খুনি সজলের প্রতি চিরনিবেদিত। আলভির রহস্যময় মৃত্যু উপন্যাসে যোগ করে নতুন মাত্রা। মৃত আলভির অশরীরী আবির্ভাব ও সজলের দ্বিচারিতায় ভেঙে চুরমার হয়ে যায় মুনিয়ার ভেতর-বাহির। পারিবারিক চাপে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও স্বামী ইরাজের সঙ্গে বিয়ের প্রথম রাত থেকেই শুরু হয় মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব। খুনঝরা রক্তজবার দিকে হাত বাড়িয়ে থাকা আত্মহত্যাপ্রবণ মুনিয়ার মনোজগৎ এক অবিশ^াস্য ভাষাভঙ্গি ও গতিময় কাহিনিস্রোতে রূপায়িত হয়েছে আলোচ্য উপন্যাসে। প্যারাসাইকোলজি, থ্রিলিং ও রহস্যের অভূতপূর্ব মিথস্ক্রিয়ায় নির্মিত অনবদ্য এ উপন্যাসটি পাঠককে নতুন এক বাস্তবতার সন্ধান দিতে সক্ষম।