সম্প্রতি আমি এ সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় তরুণ লেখক সাদাত হোসাইনের উপন্যাস 'মরণোত্তম' পড়েছি। পড়ে খুবই ভালো লেগেছে।
শুরুতে বইটির নামটি আমাকে আকর্ষণ করেছিল। মনের মাঝে ভিড় করেছিল রবীন্দ্রনাথের কবিতার পঙক্তি:'মরণরে তুঁহু মম শ্যাম সমান'। অবশ্য কবিতার মতো রোমান্টিক নয়, সাদাত এখানে বতর্মান বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন, যেখানে গ্রামের আদর্শবান শিক্ষক তাঁর স্কুলকে এমপিওভুক্ত করতে না পেরে হতাশায় ভোগে, তার স্কুলের এক ছাত্রী, কোহিনুর, তাকে বখাটেরা উত্যক্ত করে, তার বিচার চাইতে গিয়ে মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়। মেয়েটি আত্মহতঢা করে। ধর্ষক উত্যক্তকারীর বাবা ও চেয়ারম্যান। উপন্যাসে এই ধর্ষকের সাজা হয়। কিস্তু কাঠখড় পোড়ানোর পরে। আদর্শবান শিক্ষকটির মর্মান্তিক মৃত্যুর বিনিময়ে। তখনই রাষ্ট্রযন্ত্র সচল হয়। এ তো নির্মম সত্য। প্রতিদিনের জীবনেই প্রতিফলিত।
উপন্যাসটিতে কেউ কেউ হয়তো মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের জীবনের ছায়া খুঁজে পাবে। কিন্তু তা ছায়াই। সাদাত হোসাইন তাঁর অননুকরণীয় ভাষা ও শৈলীতে অন্য ধরনের উপাখ্যান তুলে ধরেছেন, যা একই সঙ্গে হৃদয়স্পর্শী ও ভীষণ বাস্তব। নান্দনিক। আর হ্যাঁ, উপন্যাসটি পাঠের পর পাঠকেরা বিষণ্ন বোধ করবে, নিজেদের অপরাধী ভাববে। কেননা এদেশে, বাংলাদেশে, প্রতিদিনই হয়তো কোহিনুরদের মতো কেউ অকালে ঝরে যাচ্ছে।