বাংলার গানের পাখি ফেরদৌসী রহমান
ফেরদৌসী রহমান। একজন কিংবদন্তি শিল্পী, একজন শ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং একজন আদর্শ মানুষ। কালজয়ী শিল্পী আব্বাসউদ্দীনের চিন্তাচেতনা এবং কণ্ঠ মাধুর্যের যোগ্য উত্তরসূরি ফেরদৌসী রহমান স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল। গুণী বাবা-মা’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিকশিত এবং হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত অপরূপ কুচবিহার এবং এর কাছাকাছি অবস্থিত কাঞ্চনজঙ্গার পবিত্র সৌন্দর্যে জীবনের প্রেরণা খুঁজে পান। সংগীতের ঘরানা তাদের। তাই সংগীত আরাধনায় তিনি নিজেকে সঁপে দেন পরম ভালোবাসায়। শুরু...
বাংলার গানের পাখি ফেরদৌসী রহমান
প্রথম প্রকাশিত
একুশে বইমেলা ২০১১
পৃষ্ঠার দৈর্ঘ্য
288
ISBN
9789845020138
বইয়ের তথ্য
ফেরদৌসী রহমান। একজন কিংবদন্তি শিল্পী, একজন শ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং একজন আদর্শ মানুষ। কালজয়ী শিল্পী আব্বাসউদ্দীনের চিন্তাচেতনা এবং কণ্ঠ মাধুর্যের যোগ্য উত্তরসূরি ফেরদৌসী রহমান স্ব-মহিমায় উজ্জ্বল। গুণী বাবা-মা’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিকশিত এবং হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত অপরূপ কুচবিহার এবং এর কাছাকাছি অবস্থিত কাঞ্চনজঙ্গার পবিত্র সৌন্দর্যে জীবনের প্রেরণা খুঁজে পান। সংগীতের ঘরানা তাদের। তাই সংগীত আরাধনায় তিনি নিজেকে সঁপে দেন পরম ভালোবাসায়। শুরু থেকেই অর্জন করেন সফলতার রাজটিকা। অসম্ভব জনপ্রিয়তা পায় তার আধুনিক এবং লোকসংগীত। ধ্রুপদী সংগীত তাকে সমৃদ্ধ করেছে। সমান পারদর্শিতায় এগিয়ে যান পড়ালেখা, খেলাধুলা এবং অন্যান্য জ্ঞানার্জনে। নেতৃত্ব দেন সাংস্কৃতিক দলের সফরে এবং বিদেশে সগৌরবে বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐহিত্যকে তুলে ধরেন। শিশু-কিশোরদের সংগীত শিক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর পদ্ধতি বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। যা জাতীয় কর্ম হিসেবে স্বীকৃত। ‘এসো গান শিখি’র বিখ্যাত খালামণি প্রতিষ্ঠা করেন ‘আব্বাসউদ্দীন সঙ্গীত একাডেমী।’
এগিয়ে চলেন জীবনের স্রোতে। লক্ষ করেন নিপীড়িত মানুষের দুর্দশা। ‘ইনার হুইল’কে সঙ্গী করে তাঁদের পাশে দাঁড়ান। ছাত্রাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাকসুর রোকেয়া হলের সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন। সাংগঠনিক এবং গঠনমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার বুৎপত্তিও তাঁর কম নয়। ‘নজরুলসংগীত শিল্পী পরিষদে’র সভাপতি এবং ‘নজরুলসংগীত স্বরলিপি প্রমাণীকরণ পরিষদ’ এর অন্যতম সদস্য ছিলেন। পাঠ্যপুস্তকে সংগীত বিষয় অন্তর্ভুক্তকরন এবং পাঠসূচি প্রণয়নের গুরু দায়িত্বও পালন করেন। তিনি সংগীতে স্কলারশীপ নিয়ে ট্রিনিটি কলেজ অব মিউজিকে স্টাফ নোটেশন শিখেন। আবার সমাজবিজ্ঞানের ছাত্রী হয়ে থিসিস করেন Social life as reflected in the ballads of Ishakha.
সংগীত সাধনা আর পরিবেশনায় তিনি আটকে থাকেন নি। ছায়াছবিতে সংগীত পরিচালনা ও করেছেন। একটি ছবিতেই (মেঘের অনেক রং একক পরিচালনা করেই জয় করে নিয়েছেন শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় পুরস্কার। ‘পুরস্কার কন্যা’ হিসেবে খ্যাত তিনি জাতীয়, একুশে, স্বাধীনতা পদকসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য পুরষ্কার লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সম্মানজনক পদক ‘প্রাইড অফ পারফরমেন্স’ লাভ করেন এবং এখন পর্যন্ত এই পুরস্কারে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ প্রাপিকা।
পারিবারিক জীবনে দুই সন্তানের মাতা, কন্যা-জায়া-জননী হিসেবেও তিনি সমান সফল। আত্মীয়-বন্ধু-সহকর্মী বা সহযাত্রী সবার সঙ্গে রয়েছে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সুসম্পর্ক। উল্লেখিত সকল বিষয়ে ফেরদৌসী রহমানকে যারা যেমন জানেন বা দেখেছেন সেসব বিষয় নিয়ে লেখা নিবন্ধই এই পুস্তকে আলোচিত হয়েছে। এতে উঠে এসেছে তার বর্ণাঢ্য জীবন, বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব, নম্র আচরণ, বাঙালিয়ানা পিতার সান্নিধ্যে বেড়ে ওঠা এবং এক মেধাবী শিল্প সাধকের জীবন। এখানে আরও আছে তার পিতা আব্বাসউদ্দীনের প্রসঙ্গ। তার সংগীত তখনকার মুসলমান সমাজে আন্দোলনের মতো ছিল। যা নবজাগরণের কাজ করেছে। বাদ যায় নি চির আনন্দময়ীর দৈনন্দিন জীবনের নানা কথা। মূল্যায়ন হয়েছে অনন্য এই সংগীত বোদ্ধার গীত নানারকম সংগীতের। তার সুকণ্ঠ ধ্বনিত হয় বাংলাকে ছাড়িয়ে বিশ্বের অবারিত প্রান্তরে। বাংলার হীরা-জহরত-চুন্নী-পান্নার রত্নভান্ডারের এই উজ্জ্বল রত্নটি চিরঞ্জীব হয়ে থাকবে আজীবন।