নদী কারো নয়
মইনুল হোসেনের মনে হাহাকার-ওই যারা কাছারির মাঠে পাকিস্তানের নিশান নিয়ে নাচানাচি করছে, তাদের কি জানা নাই আধকোশা আর আমার দেশের নদী নয় ? র্যাডক্লিফ সাহেবের লাল পেন্সিলের দাগে আধকোশা এখন হিন্দুস্তানের! জলেশ্বরীর পাড় বরাবর নদীই এখন হিন্দুস্তান-পাকিস্তানের সীমান্ত। হাহাকারÑ আজ থেকে নদী তবে আর আমার নয়! এই আধকোশা এতকাল পরে তবে পর হয়ে গেল। এখন সে সীমান্তের ওপারে! আর, সীমান্তই...
নদী কারো নয়
প্রথম প্রকাশিত
একুশে বইমেলা ২০১৮
পৃষ্ঠার দৈর্ঘ্য
312
ISBN
9789845024624
বইয়ের তথ্য
মইনুল হোসেনের মনে হাহাকার-ওই যারা কাছারির মাঠে পাকিস্তানের নিশান নিয়ে নাচানাচি করছে, তাদের কি জানা নাই আধকোশা আর আমার দেশের নদী নয় ? র্যাডক্লিফ সাহেবের লাল পেন্সিলের দাগে আধকোশা এখন হিন্দুস্তানের! জলেশ্বরীর পাড় বরাবর নদীই এখন হিন্দুস্তান-পাকিস্তানের সীমান্ত। হাহাকারÑ আজ থেকে নদী তবে আর আমার নয়! এই আধকোশা এতকাল পরে তবে পর হয়ে গেল। এখন সে সীমান্তের ওপারে! আর, সীমান্তই কাকে বলে ? কোনো রেখা তো দৃষ্টিপথে নাই। আছে! র্যাডক্লিফ সাহেবের টেবিলে বিছানো বাংলার মানচিত্রের বুকে লাল পেন্সিলের দাগ! যেন রক্তধারা! রক্তের রেখার ওপারে এখন আধকোশা। ওপারের ওই বালি-বিস্তীর্ণ পাড় আর আমার নয়। ওপারের ওই ঝাউগাছ আমার নয়। ঝাউগাছের ভেতর দিয়ে বহে যাওয়া বাতাসও আর আমার নয়! বালির বুকে ওই ঘূর্ণিও আমার নয়। খেয়াঘাটের ওই বিরলে যে শনের ছাপড়া চোখে পড়ে, ওই যে সেই ছাপড়ায় চা বানায় হাশমত, তার চুলার আগুনও আর আমার নয়, তার গেলাশের চা-ও আর আমার নয়, তার ছাপড়ার আড়ে ঝুলানো মালভোগ কলার ছড়াও আমার নয়, ওই পায়ে চলা পথের চিহ্ন আর আমার নয়, ওই সরু পথটির উঠে যাওয়া ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের সড়কে, তাও আর আমার নয়। আর আমার পায়ের তলায় তার ধূলি না লাগিবে হে! অন্য দ্যাশের ধূলি হয়া গেইছে আইজের ফজরে। ওপারের ওই আসমানও বুঝি পর হয়া গেইছে। সব মিছামার হয়া গেইছে গো। বুক ভাঙি নিয়া গেছে ঢলের আগেই এ কোন ঢল কোন পর্বত হতে নামিয়া!