কলকাতা ১৯৭১
“জয়বাংলার গাড়ি ছুটে চলেছে নগরী কলকাতার বুকে। একদল তরুণ-তরুণীর আবেগি কণ্ঠস্বর ছড়িয়ে পড়ছে সড়কের দুপাশে। দুই বাংলার মিলিত কণ্ঠস্বরে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে ওঠে বঙ্গভূমির মাটি, সে মাটি পূর্ব কি পশ্চিমের জানবার প্রয়োজন বোধ করে না কেউ। গাড়ি এগিয়ে চলে। এমন দৃশ্য আগে কখনো দেখে নি কলকাতার পথচারী, দোকানদার, ট্যাক্সিওলা, রিকশাওলা, যুবা-বৃদ্ধ, শ্রমজীবী নগরবাসী। আহা কী যে তৃপ্তি, সবাই উৎসুকে...
কলকাতা ১৯৭১
প্রথম প্রকাশিত
একুশে বইমেলা ২০২১
পৃষ্ঠার দৈর্ঘ্য
120
ISBN
978 984 502 693 2
বইয়ের তথ্য
“জয়বাংলার গাড়ি ছুটে চলেছে নগরী কলকাতার বুকে। একদল তরুণ-তরুণীর আবেগি কণ্ঠস্বর ছড়িয়ে পড়ছে সড়কের দুপাশে। দুই বাংলার মিলিত কণ্ঠস্বরে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে ওঠে বঙ্গভূমির মাটি, সে মাটি পূর্ব কি পশ্চিমের জানবার প্রয়োজন বোধ করে না কেউ। গাড়ি এগিয়ে চলে। এমন দৃশ্য আগে কখনো দেখে নি কলকাতার পথচারী, দোকানদার, ট্যাক্সিওলা, রিকশাওলা, যুবা-বৃদ্ধ, শ্রমজীবী নগরবাসী। আহা কী যে তৃপ্তি, সবাই উৎসুকে তাকিয়ে দেখে, বলে—ওই দেখ দেখ জয়বাংলার গাড়ি, বাংলাদেশের গান।...
উৎকণ্ঠার সীমা নেই নগরী কলকাতায়। কী হবে কেউ জানে না। যুদ্ধ পূর্ববঙ্গের, সে যুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ শামিল। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস, পুলিশের বাঙালি সদস্যরা বেশিরভাগই বিদ্রোহ করে যুদ্ধে নেমেছে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, সাধারণ যুবতারুণ্য, সরকারি-বেসরকারি কর্মচারী, কৃষক, শিক্ষক, শ্রমিক-জনতার প্রতিরোধে ব্যাপক এক জনযুদ্ধ শুরু হবার লক্ষণ স্পষ্ট হচ্ছে। বর্ডার অঞ্চলের স্কুল-কলেজগুলোতে রিফ্যুজিদের থাকবার জায়গা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় মুক্তিবাহিনীর ট্রেনিং ক্যাম্প গড়ে উঠছে।...
সর্বস্তরের মানুষের আবেগ ও ভালোবাসায় এক বঙ্গের মুক্তিযুদ্ধ অবিস্মরণীয় উপাখ্যানের সৃষ্টি করে আরেক বঙ্গে। উনিশ শ সাতচল্লিশের যন্ত্রণা প্রশমিত করে বঙ্গভূমিকে একীভূত করে উনিশ শ একাত্তর। এই আন্দোলনে বড় গতি আনে বাংলার সৃজনশীল মানুষেরা, যাদের সিংহভাগ কলকাতা-কেন্দ্রিক। প্রায় নয়মাস ধরে মিছিলে মিছিলে, স্লোগানে স্লোগানে ভরে থাকে কলকাতার অলিগলি, সড়ক-রাজপথ, রচিত হয় নিত্যনতুন গান ও কবিতা। বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড ও বালুহক্কাক লেনের বাড়ি দুটো সৃষ্টিসুখের উল্লাসে মেতে ওঠে।...”