একুশের বইমেলা ২০২৪-এ শ্রেষ্ঠ প্যাভিলিয়নের স্বীকৃতি পেল 'অন্যপ্রকাশ'। বাংলা একাডেমির এই পুরস্কার প্যাভিলিয়নের অঙ্গসজ্জায় নান্দনিকতার জন্য। সম্মানিত বিচারকমণ্ডলী এবং বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। কৃতজ্ঞতা জানাই স্থপতি এস এম তাসবীরকে, যার নকশায় নির্মিত হয়েছে প্যাভিলিয়ন।
‘সৃজনশীল প্রকাশনায় উৎকর্ষের সন্ধানে’-- এই চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে যাত্রা শুরু হয় ‘অন্যপ্রকাশ’-এর। সেটা ছিল ১৯৯৭ সাল। তারপর দীর্ঘ সাতাশ বছরের পথচলায় এই চেতনাকে আমরা লালন করেছি, চর্চা করেছি প্রতিনিয়ত। বিষয় কিংবা বিপণনের উৎকর্ষের কথা যেমন সব সময় মনে রেখেছি, তেমনি মুহূর্তকাল বিস্মৃত হই নি নান্দনিকতার কথাও। বইয়ের প্রোডাকশন কীভাবে আরও সৌকর্যময় করে তোলা যায়, সদা সচেষ্ট থেকেছি আমরা।
নান্দনিকতার এই বোধ থেকেই প্রতিবছর অমর একুশে বইমেলায় প্যাভিলিয়ন সজ্জাতেও ‘অন্যপ্রকাশ’ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। চেষ্টা থাকে নিজেদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিকে তুলে ধরার। তারই ফলস্বরূপ কখনো প্যাভিলিয়ন হয় কার্জন হলের আদলে; আবার কখনো আহসান মঞ্জিল, বধ্যভূমি কিংবা বাঙালির মুক্তি আন্দোলন ও সংগ্রামের প্রাণকেন্দ্র বঙ্গবন্ধুর বত্রিশ নম্বরের বাড়ি।
এ বছর ‘অন্যপ্রকাশ’ প্যাভিলিয়নের মূল সুর হচ্ছে আমাদের ঐতিহ্যের অহংকার-- ‘রিকশা পেইন্টিং’। আমাদের এ ঐতিহ্য সম্প্রতি বিশ্বস্বীকৃতিও লাভ করেছে। বাংলাদেশের রিকশা ও রিকশা পেইন্টিং জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার কাসান শহরে ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ সংরক্ষণ বিষয়ক ২০০৩ কনভেনশনের চলমান আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিষদের সভায় ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে এই বৈশ্বিক স্বীকৃতি আসে।
এই অনন্য অর্জনের উদযাপনে আমরা তাই এ বছর ‘অন্যপ্রকাশ’ প্যাভিলিয়নের সজ্জায় থিম হিসেবে বেছে নিয়েছি রিকশা পেইন্টিংকে। চেষ্টা করেছি নান্দনিক উপস্থাপনার মাধ্যমে এই শিল্পের সুষমায় জনমানুষকে সম্পৃক্ত করতে।
আমরা মনে করি বহুলাংশে সফল হয়েছি। বইমেলায় আগত অজস্র পাঠক-দর্শনার্থী ‘অন্যপ্রকাশ’ প্যাভিলিয়নের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন, মোহিত হয়েছেন। সাধারণের এই ভালোবাসা সত্যিই অসাধারণ। এর তুল্য কিছুই হয় না। আমরা আপ্লুত।
জনমানুষের ভালোবাসা আর সেরা প্যাভিলিয়ন হিসেবে কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি, এই দুয়ে মিলে আমরা অভিভূত!!