শরতের শেষ থেকে
লেবুগাছে হলদে চ্যাপ্টা লেবু ধরেছে। গাছটা অদ্ভুতভাবে মাচার ওপরে তোলা বাড়ির বারান্দায়। বারান্দার দরজার রং গাঢ় নীল। খুব আহ্লাদী ভঙ্গিতে নুয়ে পড়েছে একধারে বড় বাগানবিলাস গাছ। লেবু ফুলের অদ্ভুত সৌরভ চারদিকে। সামনে নীল জলরাশি। যে জায়গাটা এতক্ষণ সে স্বপ্নে দেখেছে তা সান্তোরিনি নামের একটা দ্বীপ। গতকাল ঘুমানোর আগে একটা ট্রাভেল শো দেখছিল। ইদানীং ওর ঘরে মন বসে না। ইচ্ছে করে...
শরতের শেষ থেকে
প্রথম প্রকাশিত
একুশে বইমেলা ২০২৪
পৃষ্ঠার দৈর্ঘ্য
128
ISBN
9789845028714
বইয়ের তথ্য
লেবুগাছে হলদে চ্যাপ্টা লেবু ধরেছে। গাছটা অদ্ভুতভাবে মাচার ওপরে তোলা বাড়ির বারান্দায়। বারান্দার দরজার রং গাঢ় নীল। খুব আহ্লাদী ভঙ্গিতে নুয়ে পড়েছে একধারে বড় বাগানবিলাস গাছ। লেবু ফুলের অদ্ভুত সৌরভ চারদিকে। সামনে নীল জলরাশি। যে জায়গাটা এতক্ষণ সে স্বপ্নে দেখেছে তা সান্তোরিনি নামের একটা দ্বীপ। গতকাল ঘুমানোর আগে একটা ট্রাভেল শো দেখছিল। ইদানীং ওর ঘরে মন বসে না। ইচ্ছে করে সমুদ্রের কাছে গিয়ে পা ডুবিয়ে বসে থাকতে।
হৃদয়ের গোপন অসুখ সমুদ্র সারাতে পারে ? কে জানে! সমুদ্রের অপর নাম হচ্ছে রত্নাকর। সাগরের সেই রত্ন তো ঝিনুক। তনুর মাঝে মাঝে মনে হয় ঝিনুকের মুক্তোর মতো আমাদের মনের গহিনের দুঃখ। লোকে সেই দুঃখ ভুলতে সাগরে যায়। সাগরে গিয়ে ভাসিয়ে দেয় গহিনের বেদনা। স্থলের মানুষের সকল বিষাদ যেন ঝিনুক নিজের মাঝে মুক্তোর মতো ধারণ করে। সেজন্যেই সাগর রত্নাকর।
উড়োজাহাজ রাজশাহী শাহ মখদুম বিমানবন্দরে অবতরণ করছে। আকাশ থেকে পাখির চোখে দেখছে অভীক ওর প্রিয় শহরকে। সবুজের চাদর বিছানো চারদিকে। বিমান রাজসিক ভঙ্গিতে উড়লে ও অবতরণের সময় তার অহং যেন চূর্ণ হয়। সাবধানে স্পর্শ করে রানওয়ে। যেন ভূমির কাছে ফেরত এলে তাকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে হয়। পাখির মতন উড়ে বেড়ানো শেষে এই মাটির কাছেই ফিরতে তার কত আয়োজন!
পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সব সম্পত্তি বিক্রি করবে। বরেন্দ্র অঞ্চলে কিছু ধানী জমি আর একটা পুকুর আছে। দাদার হয়তো এসবের সঙ্গে নস্টালজিয়া ছিল। বাবারও ছিল। অভীকের নেই। তিনপুরুষে হাতবদল হলে মাটি আর মা থাকে না। নস্টালজিয়ার ফিল্টার বুঝি একেক পুরুষে ফিকে হতে হতে ক্রমশ একেবারেই বিলীন হয়।
জোনাকি ভাবে রাতের বেলায় খেলার ছলে সে যেসব জোনাকিকে বোতলবন্দি করত সেই অপরাধে সেও আপনজনদের থেকে বিচ্ছিন্ন। জোনাকির জীবনে আলো নেভানোর অপরাধে কি তার জীবন এমন অন্ধকার হয়ে গেল ?